আজ রবিবার ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম:
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে সুসংহত করতে হবে-ধর্মমন্ত্রী ময়মনসিংহ – শেরপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ১৮কিঃ মিঃ সড়ক দূর্ঘটনা কবলিত পরিণত গৌরীপুর ছাত্র ইউনিয়নের ৭২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত একুশে পদকপ্রাপ্ত বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ ভাষা সৈনিক এম.সি.এ হাতেম আলী মিয়ার ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত ফেইসবুকে ধর্মীয় মুল্যবোধে আঘাত করায় জিকেপি কলেজের প্রদর্শক সুনীল গ্রেফতার তারাকান্দায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এক কৃষকের মৃত্যু তারাকান্দায় ছুরিকাঘাতে ব্যবসায়ী যুবক খুন ময়মনসিংহে ট্রেনের ধাক্কায় স্বামী-স্ত্রী নিহত তারাকান্দায় দোকানের বাকি নিয়ে সংঘর্ষে পুত্র খুন : বাবা আহত গৌরীপুর বিশ্ব বই দিবস পালিত
||
  • প্রকাশিত সময় : এপ্রিল, ১৬, ২০২১, ১:৪৯ পূর্বাহ্ণ




ময়মনসিংহে ফাতেমাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার আলামত মেলেছে ময়না তদন্ত রিপোর্টে

এম এ আজিজ, স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ ॥ ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় গৃহবধু ফাতেমা হত্যাকান্ডকে আত্বহত্যা বলে চালানোর সকল চেষ্ঠা ব্যর্থ হয়েছে ঘাতকচক্র। শ্বাসরুদ্ধ করে ফাতেমাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ময়না তদন্তকারী ডাক্তার রিপোর্ট প্রদান করেছে। নিহতের স্বামী বোরহান উদ্দিন, শশুর নুরুল ইসলাম, শাশুড়ী সুরুজ বানু, দেবর আবু হানিফা, বোন জামাই শহীদ মিয়া, মোহাম্মদ আলী, ননদ হালিমা বেগম প্রত্যক্ষভাবে জড়িত বলে নিহতের পিতা আবুল কাশেম পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেছেন। মামলায় শহীদ মিয়া, হালিমা বেগম ও মোহাম্মদ আলী এই ৩ জনকে অন্তভুক্তির দাবী জানান।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, হালুয়াঘাটের বাহির শিমূল গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে ফাতেমার সাথে ৬ বছর আগে ধোবাউড়ার পশ্চিম মেকিয়ারকান্দার নুরুল ইসলামের ছেলে বোরহান উদ্দিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী বোরহান ও তার পরিবারের সদস্যরা যৌতুকের দাবিতে ফাতেমাকে নির্যাতন করে আসছিল। এরই মাঝে রহমত আলী নামের এক ছেলে সন্তানে মা হন ফাতেমা। রহমত আলী পানিতে ডুবে মারা যায়। সন্তান পানিতে ডুবে মরার ঘটনায় ফাতেমার উপর নেমে আসে অমানষিক নির্যাতন। ফাতেমা আবারো গর্ভবর্তী হন। চলে মাত্রারিক্ত নির্যাতন। নির্যাতন বাড়তে থাকলে ফাতেমা তার পিত্রালয়ে চলে যান। পিত্রালয়ে অবস্থানকালে ফাতেমা ছেলে সন্তানের মা হন। ফাতেমা ছেলে সন্তানের মা হওয়ার খবর তার স্বামীর বাড়িতে নিয়ে গেলে স্বামী বোরহান ও তার পিতা নুরুল ইসলামসহ পরিবারের সদস্যরা ফাতেমাকে তাদের বাড়িতে জায়গা দিবে না বলে প্রকাশ্য হুংকার ছুড়েন। দীর্ঘ আলোচনাশেষে গত ৩০/১০/২০২০ তারিখে ফাতেমাকে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে যায় তারই শ্বশুর। স্বামীর বাড়িতে নেয়ার পর পরই তাকে বাড়িতে উঠতে দিবে বলে স্বামী বোরহান, শ্বশুর নুরুল ইসলাম, দেবর হানিফ, শ্বাশুড়ি সুরুহ বানু অন্যান্যরা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে ফাতেমা স্বামীর বাড়িতে আশ্রয় পেলেও তার উপর চলে অমানষিক নির্যাতন। উপায়ান্তর না পেয়ে ফাতেমা তার উপর নির্যাতনের বর্বর চিত্র তুলে ধরে পিতার বাড়িতে খবর পৌছায়। এরই মাঝে গত ৮/১১/২০২০ তারিখ সন্ধ্যায় ফাতেমার পিতার কাছে খবর আসে তার মেয়ে ফাসিতে ঝুলে আত্বহত্যা করেছে। খবর পেয়ে রাতেই পিতা আবুল কাশেম তার মেয়ের বাড়িতে গিয়ে মেয়ের লাশ ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখতে পেয়েছেন।
ফাসিতে ঝুলে মৃত্যুর খবর ছড়ানো হলেও মেয়ের লাশ মাটিতে পড়ে থাকার ঘটনায় তার মেয়েকে হত্যা করে আত্বহত্যা বরে চালানোর চেষ্ঠা করছে স্বামীর পরিবার। হত্যাকান্ডে মৃত্যু হয়েছে এমন দাবি করে নিহতের পিতা ধোবাউড়া থানায় হত্যা মামলা দায়েবের চেষ্ঠা করলেও চাপের মুখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০৩ এর ৯-ক মানহানীকর কার্যকলাপের দ্বারা সম্ভ্রমহানির মাধ্যমে আত্বহত্যায় বাধ্য করার অপরাধ ধারায় ৮ (১১)২০২০ দায়ের করতে বাধ্য করা হয়। মামলায় স্বামী বোরহান উদ্দিন, শশুর নুরুল ইসলাম, শাশুড়ী সুরুজ বানু, দেবর আবু হানিফা আসামী করা হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্ত বোরহানকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছে। আসামীরা সকলেই জামিনে রয়েছে।
এদিকে ময়না তদন্ত রিপোর্টে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে ডাক্তার রিপোর্ট প্রদান করেছে। মেয়ে ফাতেমাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে এমন তথ্য জানতে পেরে নিহতের পিতা মামলাটিকে হত্যা মামলা এবং পুর্বের আসামীসহ শহীদ মিয়া, হালিমা বেগম ও মোহাম্মদ আলীকে আসামী হিসাবে সংযুক্ত করে হত্যার রহস্য উদঘাটন ও দায়ীদের বিচার দাবি করেছেন। আবুল কালাম তার আবেদনে পুলিশ সুপারকে অবহিত করেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার সাথে জড়িতদের নাম ধীরে ধীরে অবগত হই। অপরদিকে ময়না তদন্ত রির্পোটের মাধ্যমে হত্যাকান্ডের বিষয়টি সুস্পষ্ট হয়। মামলায় পুর্বের আসামীদের সাথে শহীদ মিয়া, হালিমা বেগম, মোহাম্মদ আলীকে সম্পৃক্ত করে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। আবুল কাশেম বলেন, ঘাতকচক্রটি আমার মেয়েকে হত্যাশেষে আত্বহত্যা বলে চালানোর চেষ্ঠা করে ব্যর্থ হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্টে হত্যার আলামত পাওয়া গেছে। তিনি আসামীদের ফাসি দাবি করেছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মলয় চক্রবর্তী জানান, যৌতুকের কারণে নির্যাতনে গৃহবধূ ফাতেমার মৃত্যু হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্টে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার আলামত পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় নারী ও শিশু আইনে ৯-ক ধারায় মামলা হয়েছে। মামলায় স্বামী বোরহানকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়। বোরহানসহ সকলেই জামিনে রয়েছে। তিনি আরো বলেন, যৌতুকের কারণে ফাতেমাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে, এটা নিশ্চিত। তদন্তে যাদের নাম পাওয়া যাবে তাদেরকে অভিযুক্ত করে যৌতুকের কারণে খুন ১১/ক ধারায় আদালতে চার্জসীট দেয়া হবে। যার সর্ব্বোচ্য শাস্তি মৃত্যুদণ্ড এবং যাবজ্জীবন।




Comments are closed.

     এই বিভাগের আরও খবর




অনলাইন জরিপ

জাতিসংঘের বিশেষ দূত এলিস ক্রুজ বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল সব মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। আপনিও কি তা-ই মনে করেন?

View Results

Loading ... Loading ...

পুরনো সংখ্যার নিউজ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০